অনলাইন ইনকামএসইওওয়েবসাইট টিপসওয়েবসাইট থেকে ইনকামটিপস এন্ড ট্রিকস

ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর ১৫টি কার্যকরী কৌশল

আসসালামু আলাইকুম। ওয়েবসাইট তৈরির পর আমাদের প্রথমেই যে জিনিসের উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত তা হলো ভিজিটর। একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য ভিজিটর বা ট্রাফিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিজিটর ছাড়া ওয়েবসাইট মূল্যহীন। আজকে আমি ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর ১৫টি কার্যকরী কৌশল সম্পর্কে কথা বলব।

আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়াতে চান? জেনে নিন!

ওয়েবসাইটের ভিজিটর কি?

আপনার হয়তো প্রশ্ন থাকতে পারে যে, ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর কি? কিংবা ভিজিটর বলতে কি বুঝায়?

ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক বলতে কোনও ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা ওয়েব ব্যবহারকারীদের বোঝায়। অথবা ওয়েবসাইট ভিজিটর এমন কেউ যিনি আপনার ওয়েবসাইটটি দেখেন। খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে আমাদের ওয়েবসাইটের ট্রাফিক হলো আমাদের বাড়ির মেহমান বা গেস্ট এর মত।

অর্থাৎ আপনার বাড়িতে যারা বেড়াতে আসেন তারা যেমন আপনার মেহমান তেমনি আপনার ওয়েবসাইটে যারা ভিজিট করে বা প্রবেশ করে তারাই আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বা ট্রাফিক।

ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর ১৫টি উপায়

আপনারা যারা ওয়েবসাইট জগতে নতুন তাদের মনে একটি প্রশ্ন হলো, কীভাবে ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক বাড়ানো যায়। চলুন তাহলে জানি, নতুন ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর ১৫ টি উপায়।

১। কনটেন্ট (Content/Article)

কনটেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানোর জন্য। অনেকে বলে এসিও করতে হবে ভিজিটর বাড়ানোর জন্য তবে জেনে রাখুন ভালো মানের কনটেন্ট না থাকলে এসইও (SEO) করলেও লাভ হবে না।

কনটেন্ট হল কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্য তুলে ধরার মাধ্যম বা কন্টেন্ট হল কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্য উপাত্ত কে বোধগম্য করার নমুনা। সেটা হতে পারে কোন টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও কনটেন্ট, ডক ফাইল ইত্যাদি অনেক ধরনের কন্টেন্ট ই আছে।

আপনি ব্লগ লিখেন বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেন আপনাকে সবসময় অরিজিনাল, কার্যক্ষম, ইউনিক কোয়ালিটি আর্টিকেল পোস্ট দিতে হবে। আপনার লিখাটি এমন হবে যাতে করে ভিসিটর আপনার কাছ থেকে নতুন কিছু জানতে পারে। আর আর্টিকেল লিখার সময় কিওয়ার্ড ডেনসিটি এবং আর্টিকেলের ওয়ার্ড কাউন্টের বিষয়টি খেয়াল হবে ও অন-পেজ এসিও করতে হবে। যেমনঃ মেটা ট্যাগ, মেটা ডিস্ক্রিপশন সেট করতে হবে।

Website Content Writing Tips
আর্টিকেল লেখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ গাইডলাইন

লেখার মাঝখানে প্রাসঙ্গিক ছবি বা ভিডিও যোগ করা কনটেন্টকে আরও আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল করে তোলে। এই ছবি বা ভিডিও কন্টেন্টের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি করে তেমনি কনটেন্ট এর SEO করতে অনেক সাহায্য করে। আপনি কন্টেন্টে ইমেজ বা ছবি ব্যবহার করবেন তার এসিও অপটিমাইজেশন করে নিবেন। ছবির টি রিনেম করে আপনার কন্টেন্ট এর টাইটেল টি লিখে দিবেন। তাহলে Google Search এ রেঙ্ক করতো অনেক সাহায্য করবে।

আর আর্টিকেল লেখার সময় কিওয়ার্ড ডেনসিটি (Keyword Density) অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। যেমন, ধরুন আর্টিকেল লিখছেন ৭০০ ওয়ার্ডের সেখানে আপনার মেইন কিওয়ার্ড ব্যাবহার করবেন মিনিমাম তিন বার একই রকম, আর ওর সাথে ফ্রেজাল কীওয়ার্ড ব্যবহার করবেন ৩ থেকে ৫ বার। পুরোনো আর্টিকেল এর কোনো তথ্য যদি পুরনো মনে হয়, তবে সেটা আপডেট করুন।

** মনে রাখবেন ১০টি কপি-পেস্ট করা পোষ্ট সর্বোচ্চ ১ হাজার ভিউ হবে, কিন্তু একটি ভালো মানের পোস্ট তার থেকে ১০ গুণ বেশি ভিউ হবে। তাহলে চিন্তা করুন কোনটি ভাল? ১টি নাকি ১০টি? তাই বেশি বেশি পোস্ট করার চেষ্টা না করে ইউনিক, গুণমান সম্পন্ন আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করুন। আশা করি ভালো রেজাল্ট পাবেন। **

আপনি যদি সাইটে ভালো মানের কনটেন্ট দিতে পারেন তাহলে দেখবেন রাতারাতি আপনার ওয়েবসাইট ইনডেক্স হয়ে যাবে আর সেটি সার্চ ইঞ্জিনে লিস্টেড হয়ে যাবে এবং ভিজিটর আসতে থাকবে।

২। সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)

নতুন কিংবা পুরনো যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর বাড়ানোর অন্যতম প্রধান একটি উপায় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)। ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিকের ক্ষেত্রে অর্গানিক ট্র্যাফিক সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে কোনো কিছু সার্চ করার পর কেউ যদি আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ লিস্টে খুঁজে পায় এবং সেখানে ক্লিক করে আপনার ওয়েবসাইটে ঢুকে পড়ে, তবে এ ধরনের ভিজিটকে অর্গানিক ট্রাফিক বলা হয়।

ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টের উপরে নিয়ে আসার কাজটি হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) এর মূল কাজ। এটি শুরু করার আগে অন-পেজ, অফ-পেজ, মেটা ট্যাগ, মেটা ডেসক্রিপশন, ইমেজ অপটিমাইজেশন, কীওয়ার্ড রিসার্চ, ব্যাকলিংক এই ব্যাপার গুলো সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা থাকা প্রয়োজন।

ওয়েবসাইটে ভিজিটর বৃদ্ধির জন্য জনপ্রিয় তিনটি প্ল্যাটফর্ম (Google, Bing, Yandex) এই সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে আপনার ওয়েবসাইট সাবমিট করুন। তবে মনে রাখবেন সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কাছে কনটেন্টের অন পেইজ এসইও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভিজিটর আনার জন্য আপনাকে অবশ্যই On-Page SEO সঠিকভাবে করতে হবে।

৩। সামাজিক মাধ্যম (Social Media)

একটি নতুন ওয়েবসাইট সম্পর্কে সাধারণত কেউ জানে না। তাই আপনার ওয়েবসাইটের টার্গেট ভিজিটরদের কাছে পৌঁছানোর সব থেকে সহজ এবং কার্যকর উপায় হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া।

ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে সারা বিশ্বের মানুষের আনাগোনা। আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ভিজিটর বৃদ্ধির জন্য নিজের ওয়েবসাইট রিলেটেড পেজ খুলতে পারেন। এরপর নিজের আর্টিকেলের লিংকসহ মানুষকে আকৃষ্ট করার মতো পোস্ট শেয়ার করতে পারেন। এতে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে খুব সহজেই অনেক অনেক ভিজিটর নিয়ে আসতে পারবেন।

Top 8 Social Media
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

৪। ফোরাম পোস্টিং (Forum/Blog Posting)

ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার আর একটি চমৎকার উপায় হলো ফোরাম বা ব্লগ পোস্টিং এবং প্রশ্ন-উত্তর সাইট। ফোরাম এবং প্রশ্ন উত্তর সাইট গুলোতে মানুষ বিভিন্ন ব্যাপারে জানতে চেয়ে পোস্ট করে। সেখানে ভিজিটর যে বিষয়ে জানতে চায় সে সম্পর্কে কিছু ইনফরমেশন দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে দিলে ওই সাইট গুলো থেকে ট্রাফিক আপনার সাইটে আসবে এবং সার্চ ইন্জিনে রাঙ্ক করতে সাহায্য করবে।

তবে খেয়াল রাখতে হবে ফোরাম সাইট কিংবা প্রশ্ন-উত্তর সাইট গুলোতে উত্তর দেয়ার সময় সেটা যেনো সঠিক নিয়মে করা হয়। অনেক ফোরাম সাইট আছে যেগুলো অন্য ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করা পছন্দ করে না। তো এসকল সাইটে কাজ শুরু করার আগেই আপনাকে এদের নিয়ম গুলো ভালো ভাবে দেখে নিতে হবে।

৫। ওয়েবসাইট স্পীড (Website Speed)

যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করার ক্ষেত্রে ব্লগ বা ওয়েবসাইটের স্পিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে ওয়েবসাইট এর স্পিড যত বেশি গুগল সর্বদা র‍্যাঙ্কের ক্ষেত্রে সেই ওয়েবসাইটকে এগিয়ে রাখে।

লোডিং স্পিড ফাস্ট করার জন্য কি কি করতে হবেঃ

  • ভালো মানের হোস্টিং ব্যবহার করতে হবে
  • সঠিক ভাবে কনফিগার করতে হবে
  • ফাস্ট লোডিং থিম ব্যবহার করতে হবে
  • অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার না করা
  • ইমেজ অপটিমাইজ করতে হবে

SEO চেক করতে এই টুলস ব্যাবহার করতে পারেন Full Website Analyzer এই টুলস এর মাধমে ওয়েবপেজের সকল বিষয় চেক করতে পারবেন।

Website Speed Test এই টুলস এর মাধমে জানতে পারবেন লোড হতে কত সময় লাগে, CSS, JS, Image কতগুলো ফাইল আছে ও ফাইল সাইজ।

৬। ভিডিও মার্কেটিং (Video Marketing)

ভিডিও মার্কেটিং ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার একটি কার্যকর মাধ্যম হতে পারে। ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট গুলোতে নিশ রিলেটেড ভিডিও পোস্ট করে ডিসক্রিপশনে ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করলে ওই ভিডিও থেকে ভিজিটরকে নিজের ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানো যেতে পারে। ফ্রি ইউটিউব ব্যাকলিংক জেনারেটর

জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট

  • https://youtube.com
  • https://vimeo.com
  • https://dailymotion.com
  • https://hulu.com
  • https://ustream.tv
  • https://tiktok.com

৭। ইন্টারনাল লিংক (Internal Link)

আপনার ব্লগে যখন কোন নতুন পোস্ট দিবেন তখন সেখানে ইন্টারনাল লিঙ্কিং করতে ভুলবেন না। এতে আপনার ব্লগে ভিজিটর অনেকক্ষণ থাকবে। যেমন আপনার ব্লগ “টিপস এন্ড ট্রিকস” রিলেটেড আর আপনি সেখানে পোস্ট দিচ্ছেন “ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টলের পর যা করতে হবে” এখন আপনার ব্লগে যদি সেম টাইপের অন্য কোন পোস্ট থাকে তবে এটিকে তার সাথে লিংকআপ করে দেন। তখন আপনার ভিসিটর সেই পোস্টটি পড়বে আর এটি আপনার ব্লগের বাউন্সরেট কমাতে সাহায্য করবে।

৮। বাউন্স রেট খেয়াল রাখা

বাউন্স রেট সাধারণত শতাংশ (percentage) হিসাবে প্রকাশ করা হয়। বাউন্স রেট হলো এমন একটা % যেটা দ্বারা বোঝানো হয় “আপনার ওয়েবসাইটে আসার পর মোট ভিজিটরের কতো % অন্য পেজ ভিজিট না করেই বন্ধ করে দিয়েছে” অর্থা যদি আপনার ওয়েবসাইটের মোট ভিজিটর যদি হয় ১০০ জন তার মধ্যে ৬০ জন্যই আপনার হোম পেজ লোড হওয়ার পর অণ্য কোনো পেজ ভিজিট না করেই আপনার ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেয় তবে আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট হবে ৬০%।

প্রশ্ন আসতে পারে ওয়বেসাইটের বাউন্স রেট এর স্টান্ডার্ড % কতো।

বাউন্স রেটস্টান্ডার্ড
৩০% এর নিচেখুব ভালো
৪১% – ৫৫%ভালো
৫৬% – ৭০%খুব ভালো নয়
৭০% এর বেশিখুব খারাপ

৯। ব্যাকলিংক তৈরি করা (Backlinks)

এসইও এর জন্য ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকলিংক হচ্ছে কোন ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটকে লিঙ্ক করা। আপনার ওয়েবসাইটের কোনো লিংক যদি অন্য আরেকটি ওয়েবসাইটে থাকে তাহলে সেটা আপনার সাইটের ব্যাকলিংক।

ব্যাকলিংক প্রধানত দুই রকমের হয়ে থাকে (১) dofollow (২) nofollow

Dofollow ব্যাকলিংক গুলো হল এসইও এর জন্য সব থেকে ব্যবহৃত এবং গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি সাইটে dofollow লিংক ব্যবহার করেন তখন গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে বোঝান যে এই লিংকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং এটিকে যাতে চিহ্নিত করা হয়।

ব্যাকলিংক করার আগে এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবেঃ-

  • যেখান থেকে ব্যাকলিংক নিচ্ছেন সেটি কি অথোরিটি সাইট কি না
  • সেখানকার ইনডেক্স পেজ কেমন
  • ডু-ফলো (Dofollow) নাকি নো-ফলো (Nofollow)
  • ব্যাকলিংক টি আপনার সাইটের সাথে রিলেটেড হবে কি না
  • পেজ র‍্যাঙ্ক (PageRank) কেমন
  • ডোমেইন এবং পেজ অথোরিটি কেমন

কিভাবে ব্যাকলিংক করবেনঃ-

  • Social networking site profiles
  • Quora question and answer website
  • Blog commenting
  • Directory submission sites
  • Guest posting
  • YouTube video commenting
  • and more

১০। মুখে মুখে প্রচার করুন

আপনার আশেপাশের মানুষদের সাথে কথা বলার সময় বেশ কয়েকবার ওয়েবসাইটের নাম নিন। তাকে গুগলে সার্চ করে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে আহ্বান করুন। এতে করে আপনার সাইট গুগলে রেংক বাড়াতে সাহায্য করবে এছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টারিং করতে পারেন। উন্নত দেশগুলোতে পোস্টারিং করে ওয়েবসাইটে ডিরেক্ট ট্রাফিক আনার অন্যতম সাধারণ একটি মাধ্যম।

আপনার বিজনেস বা ভিজিটিং কার্ডে ওয়েবসাইটের ঠিকানা যুক্ত করে দিন। ওয়েবসাইটের পেজ ভিউ বাড়াতে এটি খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। এবং আপনার ওয়াইফাই এর নাম ওয়েবসাইটের নাম এডিট করে দিতে পারেন। এবং আপনার ওয়াইফাই এর নাম ওয়েবসাইটের নাম এডিট করে দিতে পারেন।

১১। আকর্ষনীয় ছবি (Thumbnail Picture)

থাম্বনেইল মানে হলো একটি ফটো বা চিত্র যেটিকে আপনি পোস্টারও বলতে পারেন। ফটো / ইমেজ যেকোনো ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে একটি সুন্দর আইক্যাচি ফটোর সাথে ওয়েবসাইটের লিংক দেওয়া থাকলে নরমাল যেকোনো সময়ের থেকে ওয়েবসাইটে বেশি ভিজিটর পেয়ে থাকে।

তবে খেয়াল রাখবেন থাম্বনেইল অতিরিক্ত বড় বা ফাইল সাইজ বড় হলে পেজ লোডিং হতে অনেক সময় লাগবে, যার ফলে ওয়েবসাইট স্লো হয়ে যাবে। অনেকে আছে হাই রেজুলেশন ছবি দের যার ফাইল সাইজ ১ এমবির উপরে। আপনি যদি ২ এম্বির একটা থাম্বনেইল সেট করে থাকেন। ভিজিটর যখন ঐই পেজে ভিজিট করতে যাবে তখন তার ২ এম্বির বেশী লোড নিবে, অর্থাৎ তার ডাটা প্যাকেজ থেকে এমবি বেশী কাটবে। এবং লোড হতেও অনেক বেশী সময় লাগবে।

তাই চেস্টা করবেন মিডিয়াম রেজুলেশনের ভীতরে আকর্ষনীয় একটি ছবি দিতে।

থাম্বনেইল সাইজ

  • 1200 x 630 pixels অথবা 1200 x 628 pixels
  • 660 x 480 pixels
  • 600 x 315 pixels

১২। পর্যবেক্ষণ (Google Analytics)

ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য ওয়েব এনালাইটিক্স (Web Analytics) ব্যবহার করা একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। গুগল অ্যানালিটিক্স (Google Analytics) হল সর্বাধিক জনপ্রিয় ডিজিটাল অ্যানালিটিক্স টুল। এই টুলের সাহায্যে আমরা কোন ওয়েবসাইটের সমস্ত ভিজিটর স্ট্যাটিসটিকস জানতে পারি। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জগতে গুগল এনালাইটিক্স একটি খুবই পরিচিত নাম।

Google Analytics এর মাধ্যমে জানতে পারবেন কোথায় থেকে আপনার সাইটে ভিজিটর আসে, তারা কোন পেজে বেশি যান, কোন বিষয়ে তাদের আগ্রহ বেশি, কত সময় ধরে দেখেন, তারা কি ব্রাউজার ব্যবহার করে, কম্পিউটার নাকি মোবাইল থেকে ভিজিট করেছে, তারা কোন বয়সের, সব কিছু জানতে পারবেন অর্থাৎ ওয়েবসাইট এনালাইটিক্সের সুবিধা নেওয়া যাবে।

১৩। মোবাইল উপযোগী সাইট (Responsive Website)

রেসপন্সিভ বলতে বোঝানো হয়েছে যে সাইট গুলো ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ফোন, ট্যাবলেট সবকিছুতেই সমান ভাবে ইউজার ফ্রেন্ডলি লোড নিতে পারে এবং ডাটা রিসিভ করতে কোনো সমস্যা হয় না। একটি রেসপন্সিভ (Responsive) ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য সঠিক থিম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথবা একটি ভালো থিম ডিজাইন করার জন্য অভিজ্ঞ ডিজাইনারের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

এখন স্মার্টফোনের যুগ হওয়ায় ফোন থেকেই ওয়েবসাইট সার্চ বেশি হয়ে থাকে। তাই ফোন থেকে ভিজিটর এর পরিমাণ অনেক বেশি। তাই সাইটের মোবাইল ভার্সন বা রেসপন্সিভ ডিজাইন থাকা আবশ্যক। খেয়াল রাখতে হবে মোবাইল ভার্সনে স্বল্প সময়ে সাইট লোড হলে এবং সুন্দর ও পরিষ্কার ভাবে পড়া গেলে তা পাঠকপ্রিয় হবে।

শুধু সুন্দর লুক দেখেই থিম পছন্দ করলে হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত টেম্পলেট যত বেশি ফাস্ট লোডিং এবং লাইট-ওয়েট হবে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করার সম্ভাবনা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। সহজেই নেভিগেশন করা যায় এমন থিম পছন্দ করুন। ওয়েবসাইটে সাইডবারে আলাদাভাবে ক্যাটাগরির ব্যবস্থা করা এবং প্রতিটি আর্টিকেলের শেষে রিলেটেড পোস্ট রাখা। এতে করে ভিজিটর খুব সহজেই আপনার অন্যান্য আর্টিকেল গুলো খুঁজে পাবে। সর্বোপরি আপনার ব্যবহৃত থিমটি অবশ্যই ইউজার ফ্রেন্ডলি হতে হবে।

১৪। ইমেইল মার্কেটিং (Email Marketing)

ইমেইলের মাধ্যমে একসাথে হাজার হাজার মানুষকে ইমেইল করে পন্য বা সেবা সম্পর্কে মার্কেটিং করার নামই হলো ইমেইল মার্কেটিং। আমাদের দেশে এটি ততটা জনপ্রিয় না হলেও উন্নত বিশ্বে ইমেইল মার্কেটিং জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়।

আমরা প্রতিদিন সকালে যেমন ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করি উন্নত বিশ্বের অনেক মানুষই প্রতিদিন সকালে তাদের ইমেইল চেক করেন। তাই আপনি চাইলে আপনার ব্লগের কমেন্ট, সাবস্ক্রাইব লিস্ট থেকে ইমেইল লিস্ট তৈরি করে ইমেইলে চাহিদা সম্পন্ন আর্টিকেলের সারাংশ লিখে তাদের পাঠান, এমনভাবে লিখবেন যেন তারা এটা পড়ার প্রয়োজন অনুভব করে।

ইমেইল মার্কেটিং
ইমেইল মার্কেটিং

কেন করবেন ইমেইল মার্কেটিং?

  • অল্প সময়ে বেশি প্রচার করা যায়
  • ২০২৫ সালে বিশ্বের প্রায় ৪৬০ কোটি মানুষ ইমেইল ব্যবহার করেন
  • ১ ডলার খরচ করে ৪২ ডলার লাভ করা সম্ভব
  • ইমেইলের মাধ্যমে রি-মার্কেটিং করে ৬৯% সফলতা
  • ওয়েলকাম ইমেইল অপেন রেট ৮০%
  • নির্দিষ্ট সময়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব

সেরা ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার

১৫। পেইড মার্কেটিং (Paid Marketing or PPC)

মার্কেটিং শব্দটি ল্যাটিন শব্দ “marketus” হতে “market” এবং এর থেকে marketing শব্দের উৎপত্তি। Marketing এর বাংলা পারিভাষিক শব্দ হলো বাজারজাতকরণ। মার্কেটিং করতে হলে এর মৌলিক ধারণা থাকাটা অপরিহার্য। ক্রেতাদের প্রয়োজন, অভাব, চাহিদা, পণ্য, সেবা, ভ্যালু, সন্তুষ্টি, বিনিময়, লেনদেন এবং বাজার ইত্যাদি অন্তর্নিহিত উপাদানকে মার্কেটিং বা বাজারজাতকরণের মৌলিক ধারণা বলে।

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো গুগল। আমরা যেকোনো কিছু খুঁজার বা জানার জন্য গুগলে সার্চ করি। সার্চ ইঞ্জিনগুলি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য একটি উর্বর ক্ষেত্র, কারণ এখানে ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট কিছু খোঁজার জন্য আসে এবং সেই অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেখালে তা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

আর পেইড মার্কেটিং করার জন্য গুগলের একটি পেইড সার্ভিস ‘Google Ads‘। আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। আপনি যদি Google Ads ঠিকঠাক ভাবে সেট করতে পারেন তাহলে ১০০% সফলতা পাবেন।

গুগল বিজ্ঞাপন
গুগল বিজ্ঞাপন

আবার সোশ্যাল সাইটগুলোতে ওয়েবসাইটের জন্য তৈরী করা পেইজের বিজ্ঞাপন দিন। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেসবুক। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে অন্য যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া অপেক্ষা বেশি ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব।

ফেসবুকের অ্যালগরিদম অনুযায়ী সাধারণ পেইজগুলোর পোস্ট মোট ফলোয়ারের মাত্র ৩০-৪০ শতাংশ বা তারও কম অংশের হোমপেইজে দেখানো হয়। কিন্তু আপনি যদি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেন, তাহলে আরো বেশি মানুষের কাছে আপনার পেইজের পোস্ট ছড়িয়ে পড়বে।

🎁 বোনাস টিপস

  • কনটেস্ট বা গিভঅ্যাওয়ে আয়োজন করুন
  • FAQ সেকশন রাখুন (Google Snippet পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে)
  • পুরাতন কনটেন্ট আপডেট করুন

ধন্যবাদ সবাইকে আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে কিভাবে ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর যায় এবং কিভাবে সেই ভিজিটরে ধরে রাখা যায় সে ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ধারনা পেয়ছেন।

আর্টিকেলটি সবার সাথে শেয়ার করুন। সবাই ভালো থাকুন সেই কামনায় আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button