ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সকল উপায়
অনলাইন থেকে আয় করার সহজ উপায় হল ওয়েবসাইট। আজকে আমি শেয়ার করব ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সকল উপায় সমূহ নিয়ে। আপনি জানেন কি একটি ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার সারা জীবনের স্থায়ী উপার্জনের মাধ্যম? হা অবিশ্বাস হলেও আসলেই সত্যি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার জীবনের লাইফ ইন্সুরেন্স।
একটি ওয়েব সাইট থেকে আপনি সারাজীবনের জন্য প্যাসিভ ইনকাম তৈরি করতে পারেন। প্যাসিভ ইনকাম (Pensive Income) বলতে কি বোঝায়? প্যাসিভ ইনকাম বলতে সেই কাজকে বুঝায় যেই কাজ আপনি একদিন করে রাখলে সেখান থেকে আপনি সারাজীবন অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আমরা জানি বাস্তব জীবনে আয়ের দুটি রাস্তা
- চাকরি করা
- ব্যাবসা করা
ঠিক একই ভাবে বাস্তব জীবনের মত অনলাইনেও আমরা চাকরি এবং ব্যবসা দুটোই করতে পারি।
আর আজকে আমি সজিবুল ইসলাম আপনাদের সাথে কথা বলব অনলাইনের একটি স্থায়ী ইনভেস্ট সম্পর্কে যেটা আপনি একবার করলে সারাজীবন বসে বসেই খেতে পারবেন। হ্যা, এমন একটি ইনভেস্ট হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট। তো কিভাবে নিজের একটি ওয়েবসাইট বানাবেন? এখানে সকল বিষয়ে জানতে পাড়বেন।
লেখাটা বেশ বড় হবে। মনোযোগ দিয়ে লেখাটা পড়ে দেখুন আশা করি সবাই উপকৃত হবেন।
মানুষ কেন ওয়েবসাইট তৈরি করে?
একটি ওয়েবসাইট হচ্ছে আপনার যে কোন প্রতিষ্ঠানের অনলাইন পরিচয়। যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা স্কুল, কলেজ অথবা কোম্পানি ইত্যাদি সকল প্রতিষ্ঠান তাদের নামে ওয়েবসাইট করে থাকে যাতে করে ইন্টারনেটে তাদের সম্পর্কে জানা যায় এবং তাদের বিভিন্ন সেবা বা সার্ভিস সম্পর্কে মানুষ যেন সহজেই জানতে পারে। এই জাতীয় ওয়েবসাইট গুলো হচ্ছে মূলত প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট।
কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের বাইরেও কিন্তু রয়েছে আরও প্রচুর ওয়েবসাইট যেগুলো হচ্ছে ব্যক্তিগত, ম্যাগাজিন, টেকনোলজি, ব্লগ বা আর অনেক ধরনের ওয়েবসাইট। এই ধরণের ওয়েবসাইট গুলোতে সাধারণত বিভিন্ন টিপস, ট্রিক, আইডিয়া, বিনোদন, খবর ইত্যাদি বিষয় দেয়া হয়ে থাকে। এই গুলোকে আপনি অ-প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ও বলতে পারেন। এই ধরনের ওয়েবসাইট গুলো করা হয় সাধারণত সখের বসে অথবা, টাকা ইনকাম করার জন্য বা দীর্ঘ সময় ব্যাবসা করার জন্য।
যেমন ধরুন, বাংলা ভাষায় বর্তমানে সবচেয়ে বড় টেকনোলোজি সাইট কোনটি? অবশ্যই, টেকটিউনস অথবা বাংলারব্লগ। এটা কিন্তু কোন প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট নয়, এটা হচ্ছে টেকনোলজি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট বা ব্লগ যেখানে বিভিন্ন মানুষ বা লেখকেরা টেকনোলজি বিষয়ে তাদের বিভিন্ন জ্ঞান শেয়ার করে। এতে করে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক টেকটিউনে প্রবেশ করে বিভিন্ন বিষয় শেখার জন্য। তাহলে টেকটিউন হচ্ছে একটি নন-প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট। টেকটিউনস কিন্তু হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে বিভিন্ন কম্পানির বা ব্যান্ড এর বিজ্ঞাপন বসিয়ে। কি আপনি কি পাড়বেন না?
ঠিক একইভাবে আপনিও যদি এই ধরনের একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করে সঠিক জায়গায় নিয়ে আসতে পারেন তাহলে আপানার বাকী জীবন এই ওয়েবসাইট দিয়েই চালিয়ে দিতে পারবেন।
ওয়েবসাইট এর প্রকারভেদ
গঠন বৈচিত্র্য এর ওপর ভিত্তি করে ওয়েব পেইজ বা ওয়েব সাইটকে সাধারণত দুইভাবে ভাগ করা যায়। যথাঃ
- Static Website
- Dynamic Website
ওয়েবসাইটের অনেকগুলো প্রকারভেদ রয়েছে। আমাদের বহুল আলোচিত ফেসবুকের কথায় ধরা যাক। এটি একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। ইন্সটাগ্রাম, টুইটার এসবই হল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। আবার ইউটিউব, ডেইলি মোশন এগুলো হল ভিডিও শেয়ারিং সাইট।
- ইকমার্স ওয়েবসাইট
- সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট
- তথ্য ভিত্তিক ওয়েবসাইট
- সেবা ভিত্তিক ওয়েবসাইট
কি ভাবছেন! আপনি কি পাবেন নাহ? তো চলুন জানি কিভাবে একটি নতুন ওয়েবসাইট খুলে টাকা আয় করবেন।
ওয়েবসাইট কি?
একই ডোমেইনের অধীনে একাধিক ওয়েব পেজের সমষ্টিকে ওয়েবসাইট বলে। অথবা ওয়েবসাইট হচ্ছে কোন ওয়েব সার্ভারে রাখা ওয়েব পৃষ্ঠা, ছবি, অডিও, ভিডিও ও অন্যান্য ডিজিটাল তথ্যের সমষ্টি। যা ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যায়। ওয়েবসাইটে প্রথম ঢুকলে যে পেজটি প্রদর্শিত হয় সেটিকে হোমপেজ বলা হয়। সারা বিশ্বে প্রতিদিন হাজার হাজার ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। ইন্টারনেট তথা ওয়েবে তথ্য (Text, Audio, Video, Image, Animation etc.) সংবলিত পেজ রাখা যায়। ওয়েবে এরূপ কোন তথ্য রাখার পেজকে ওয়েবপেজ বলে। সরাসরি এইচটিএমএল এর মাধ্যমে বা অন্যকোন টুলস দারা ওয়েবপেজ তৈরি করা যায়। ব্রাউজারের মাধ্যমে ওয়েবপেজকে প্রদর্শন করা যায়। একটি ওয়েবসাইটের যে কোন একটি সিঙ্গেল পেজকে ওয়েবপেজ বলে।
ওয়েবসাইট খুলতে যা যা করতে হয়ঃ
- প্রথমত একটি ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে
- ভালো মানের হোস্টিং ভাড়া নিতে হবে
- ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে হবে
- এসইও (SEO) করতে হবে বা মার্কেটিং করতে হবে
উন্নত মানের ডোমেইন হোস্টিং এবং ওয়েবসাইট ডিজাইন সার্ভিস পেতে ভিজিট করুন এখানে।
ডোমেইন কি?
ডোমেইন ইংরেজি শব্দ যার বাংলা অর্থ স্থান। আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট খুলতে চান তবে ইন্টারনেটে আপনাকে একটি স্থান তথা ডোমেইন কিনতে হবে। আপনার বাসায় যদি কেউ আসতে চায়, তবে পূর্বেই তাকে আপনার বাসার ঠিকানা জানতে হবে। ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে এই ঠিকানাটা হচ্ছে তার নাম যাকে বলা হয় ডোমেইন নেম। এই ডোমেইন নেমই আপনার ওয়েবসাইটকে আইডেন্টিফাই করবে। বিশ্বের সবাই ওয়েবসাইটটিকে চিনবে এবং একসেস করবে এই ডোমেইন নাম ব্যবহার করে।
***ডোমেইন কেনার সময় রেজিষ্ট্রেশন যেন আপনার নাম, ঠিকানা, ইমেইল, মোবাইল নাম্বার দিয়ে হয়, সেদিকে সতর্ক থাকুন। না হলে পরে আপনাকে পস্তাতে হবে।
হোস্টিং কি?
হোস্টিং হচ্ছে একটি জায়গা যেখানে ওয়েবসাইট টি রাখা হয়। আপনার ওয়েবসাইটি এমন একটা পিসি তে রাখতে হবে যেটা ২৪ ঘন্টা এবং বছরে ৩৬৫ দিন চালু থাকবে। সবসময় চালু থাকে এমন একটা পিসিতে আপনার ওয়েবসাইট রাখার সুবিধা দিয়ে থাকে হোস্টিং কোম্পানীগুলো। হোস্টিং কোম্পানীগুলো মাসিক বা বাৎসরিক টাকার বিনিময়ে এ সার্ভিস দিয়ে থাকে। এখান থেকে হোস্টিং অডার করুন
ধরুন আপনি একটি দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করলেন, তাতেই কি আপনার দোকান চালু হযে যাবে? না! আপনার একটি ঘর দরকার যেখানে আপনি আপনার মালামাল রাখবেন এবং ক্রেতারা আসবে কেনাকাটার জন্য। এই ঘরটি যত বড় হবে তত বেশি মালামাল রাখতে পারবেন এবং আপনার ক্রেতাও তত বেশি ভিড় করবে।
ঠিক একই ভাবে আপনি ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন করে রেখে দিলেই আপনার কাজ হবেনা। আপনার ওয়েব ফাইল গুলো যেমন HTML, PHP, JS, CSS, Audio, Video, Picture রাখার জন্য একটি জায়গা দরকার তো এই কন্টেন্ট রাখার জায়গাই হল হোস্টিং।
তাহলে কিভাবে একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে আয় করা যায়?
শুরুতেই বলে নেই, নতুনদের মাঝে ওয়েবসাইট বা ব্লগ নিয়ে বেশ ভাল কনফিউশন দেখা যায়। আসলে ব্লগ হচ্ছে এক ধরনের ওয়েবসাইট যেখানে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে লিখালিখি করা হয়। সেটা হতে পারে যে কোন বিষয়। আর ওয়েবসাইট হচ্ছে এক ধরনের সাইট যেখানে সাধারণত তেমন কোন চেঞ্জ হয় না, বা যেখানে লিখালিখির ব্যাপার থাকে না। আপনি ওয়েবসাইট বা ব্লগ যেটাই করুন না কেন সেখান থেকে অবশ্যই আয় সম্ভব। চলুন সামনের দিকে এগুনো যাক।
ওয়েবসাইটের সুবিধা কি?
বর্তমানে ইন্টারনেটের এ যুগে সবচেয়ে স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে তথ্য প্রকাশ করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম ওয়েবসাইট বা ব্লগ। ওয়েবসাইটের বহু সুবিধা রয়েছে যেমনঃ-
- প্রকাশিত তথ্য যে কেও যেকোন স্থান থেকে যে কোন সময় দেখতে পারে
- তাৎক্ষনিক তথ্য প্রকাশ করা যায়
- ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়
- বিভিন্ন সেবা প্রদান করা যায়
- লেখা, অডিও, ভিডিও এবং চিত্র ইত্যাদি যুক্ত করা যায়
- ঘরে বসে ইনকাম করা যায়
- একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখা যায়
- প্রয়োজনীয় তথ্য ডাউনলোড করা যায়
বর্তমানে এই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এ সকল কিছু ইন্টারনেটে অর্থাৎ ওয়েব সাইটেই মাধ্যমে করা যায়। বলতে পারেন ইন্টারনেট মানেই ওয়েবসাইট, একবার ভাবুন তো ওয়েবসাইট ছাড়া ইন্টারনেট দিয়ে কি করবেন? ফেসবুকও তো একটা ওয়েবসাইট! গুগলও তো একটা ওয়েবসাইট! ইউটিউবও তো একটা ওয়েবসাইট! তাই নয় কি??? আশা করি বুঝতে পেরেছেন ওয়েবসাইটের সুবিধা কি।
SEO and Website Tools
- Full Website Analyzer
- Backlink Generator
- Website Visitor Counter
- SSL Checker
- XML Sitemap Generator
- Whois Checker
- Website Speed Test
ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে আয় করার পদ্ধতি
আপনি জানেন কি অনলাইনে আয় করার জন্য অনেক উপায় রয়েছে তার মধ্যে ওয়েবসাইট হচ্ছে সবথেকে জনপ্রিয়। একটি ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার সারা জীবনের স্থায়ী উপার্জনের মাধ্যম। ধরুন আপনি একটি বাড়ি তৈরি করেছেন এবং সেই বাড়িটা ভাড়া দিয়েছেন। মনে করুন আপনার বাড়িটি ৫০/৬০ বছর হয়ে গেছে কিন্তু কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তাহলে সেই বাড়ি থেকে আপনি সেই ৫০/৬০ বছরে ভাড়া নিয়ে চলতে পারবেন। একইভাবে একটি সাইট তৈরি করার মাধ্যমে সারা জীবনের জন্য ইনকাম করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট থেকে আয় করার ৮টি উপায় নিচে দেওয়া হল।
১। বিজ্ঞাপন থেকে আয়ঃ
আপনার ওয়েবসাইটে যদি বেশ ভাল ট্রাফিক বা ভিজিটর থাকে তাহলে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে অন্যান্য কোম্পানীর বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করিয়ে সেখান থেকে আয় করতে পারবেন। আমরা প্রায় সময়ই বিভিন্ন ওয়েব সাইটে ঢুকলে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পন্যের বিজ্ঞাপন দেখে থাকি। এই জাতীয় বিজ্ঞাপন গুলো ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করানোর মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারেন। আপনার ওয়েবসাইটে যে কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাবেন সেই কোম্পানী আপনাকে একটি নির্দিষ্ট মূল্য পে করবে তাদের বিজ্ঞাপন আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করানোর জন্য।
তাহলে এবার বলতে পারেন, এই সকল কোম্পানির বিজ্ঞাপন পাব কোথায়? এই ধরনের বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য অনলাইনে অনেক জনপ্রিয় সাইট আছে (যেমন- গুগল অ্যাডসেন্স)। অ্যাডসেন্স মূলত গুগল কোম্পানির বিজ্ঞাপনী কার্যক্রম। গুগলের বিজ্ঞাপনদাতারা গুগল অ্যাডস সার্ভিস ব্যবহার করে তাদের পণ্য, সার্ভিস, ওয়েবসাইট, যেকোনো কিছুর অ্যাড দেয়।
আর গুগল সেগুলো পাবলিশারদের মাধ্যমে (ইউটিউব, ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ) প্রকাশ করে। প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে ‘কস্ট পার ক্লিক’ (CPC) ফরমেটে গুগল যে অর্থ পেয়ে থাকে সেটা পাব্লিশারদের সাথে ভাগাভাগি করে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অসংখ্য দেশের মানুষ শুধুমাত্র এই গুগল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তারা কেউ হয়তো ইউটিউবার, কেউ হয়তো ওয়েবসাইটের মালিক, আবার কেউ মোবাইল অ্যাপের মালিক।
এখানে কিছু জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন সংস্থার তালিকা দেওয়া হলঃ
২। ই-কমার্স (eCommerce)
পণ্য বিক্রি করতে যেমন দোকান লাগে, ই-কমার্সেও তা-ই। একটি ই-কমার্স সাইট দোকান হিসেবে কাজ করে। তাই ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে প্রথমেই বেচাকেনার একটা সাইট বানাতে হবে। ওয়েবসাইট তৈরির প্রধান উদ্দেশ্য গুলোর মধ্যে একটি হলো নিজের ব্যবসার প্রসার ও পরিচিতি। আপনি ছোট-বড়, খুচরা-পাইকারি যেকোনো ধরনের ব্যবসায়ী হোন না কেন। আপনার যদি বিক্রয়যোগ্য প্রোডাক্ট বা সার্ভিস থাকে। সেক্ষেত্রে ই-কমার্স ওয়েবসাইট নিশ্চিতভাবে আপনার ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে আপনার আয় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।
৩। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়ঃ
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে অনেকটা সেলসম্যান এর মত। এখানে, আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে দিতে হবে এবং প্রতিবার যখন আপনি অন্য কোম্পানির কোন পণ্য আপনার নিজের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন তখন আপনাকে সেই বিক্রয়কৃত অর্থ থেকে কমিশন দেয়া হবে। আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটে এই জাতীয় মার্কেটিং করতে পারেন। নিজের সাইট বা ব্লগ করে আমাদের দেশে অনেকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করছেন। কাজেই আপনিও এই জাতীয় কাজ করে আয় করতে পারেন।
৪। নিজের কোন পণ্য বিক্রি করে আয়ঃ
আপনার ওয়েবসাইট যদি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং প্রতিদিন বেশ ভাল ট্রাফিক থাকে তাহলে আপনি আপনার নিজের তৈরি করা কোন পন্যের বিজ্ঞাপন সেখানে দিতে পারেন এবং সেখান থেকে আপনি আপনার পন্যের জন্য বেশ ভাল সেল পেতে পারেন। তবে এটা শুধুমাত্র, যদি আপনার তৈরি করা কোন প্রোডাক্ট থাকে তাহলেই সম্ভব। আপনার যদি বিক্রি করার মত কোন পণ্য না থাকে তাহলে এই ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
৫। স্পন্সরড পোস্ট থকে ইনকামঃ
স্পন্সরড পোস্ট হলো আপনার সাইটে অন্য কোনো কোম্পানি পোস্ট পাবলিশ করবে এর বিনিময়ে ওই কোম্পানি আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দেবে। আপনার সাইটটি ভিজিটরের পরিমাণ বেশ ভালো হলে নিয়মিত স্পন্সরড পোস্টের জন্য আপনার কাছে রিকোয়েস্ট আসতে থাকবে। অনেক কোম্পানিই তাদের প্রোডাক্ট/সার্ভিস সম্পর্কে আপনাকে লিখতে বলতে বা তারা লিখে দিবে তা আপনার ওয়েবসাইটেই পাবলিশ করতে রিকোয়েস্ট করবে যা থেকে আপনি ভালো আয় করতে পারবেন।
৬। ফ্রিল্যান্সিং করেঃ
আপনার যদি কোনো ফ্রিল্যান্সিং স্কিল থেকে থাকে তবে কোনো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে না যেয়ে আপনার সাইটে প্রদর্শন করেই কাজ শুরু করতে পারেন। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য খোঁজে আপওয়ার্ক, ফ্রীলান্সার, এনভাটো মার্কেটপ্লেস ইত্যাদিকে। কিন্তু তারা যে তাদের নিজেদের ওয়েবসাইট থেকেই দেশ-বিদেশের ফ্রিল্যান্সিং কাজ পেতে পারে তা জানে না। আমিও আগে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস এ থেকে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং জবে বিড করে কাজ পেতাম যেটা ছিল অনেক ঝামেলার।
এখন আমি আমার ইমেইলে প্রবেশ করলেই বিভিন্ন ক্লায়েন্ট এর কাছ থেকে একাধিক রিকোয়েস্ট পাই! এটা কিভাবে পাই জানেন? হ্যা, আমার অনেক কয়টি সাইট আছে এবং আমি SEO এবং অনন্য অনেক উপায়ে বিভিন্ন দেশের লোকজন কে আমার সাইটসমূহে নিয়ে আসি। অনেকেই তাদের নিজেদের কাজের জন্য আমাকে হায়ার করার জন্য আগ্রহী হয়। এখন আমার খুবই ভালো লাগে এই ভেবে যে আগে আমি ক্লায়েন্টদের পিছনে ছুটতাম আর এখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বদৌলতে ক্লায়েন্টরা আমার পিছনে ছুটে (তবে এটা কিন্তু অহংকার করে বলছি না, আনন্দ থেকে বলছি)।
৭। ইমেইল কালেকশন করেঃ
আমরা সবাই মোটামুটি কম বেশি নেট থেকে বই, গান, ভিডিও ইত্যাদি ডাউনলোড করে থাকি। তবে, মাঝে মাঝে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে বই বা মুভি ডাউনলোড করতে গেলে আমরা দেখে থাকি আমাদের ইমেইল অ্যাড্রেস দিতে বলে। আমরা ইমেইল অ্যাড্রেস দিলে তারপর আমাদেরকে সেটা ডাউনলোড করতে দেয়। কিন্তু কেন এমনটা হয়, কেন ইমেইল এর ঠিকানা চায় ওই ডাউনলোড সাইট গুলো? এটা হচ্ছে এই জন্য যে, আপনি গান ডাউনলোড করার সময় আপনার যে ইমেইল এড্রেসটি দিবেন সেটি ওই ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ সংরক্ষন করে রাখবে। এই ভাবে যতজন ওই গানটি ডাউনলোড করবে, সকলের ইমেইল অ্যাড্রেস তার কাছে থাকবে।
এই ভাবে ধরলাম, ১০ হাজারটি ইমেইল ওই ওয়েবসাইটের মালিকের কাছে জমা হল। এবার তিনি ওই ১০,০০০ ইমেইল অ্যাড্রেস বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটারদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। কারন, অধিকাংশ ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য অ্যাক্টিভ ইমেইল অ্যাড্রেস এর তালিকা প্রয়োজন পরে। এই জন্য বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটাররা ইমেইল অ্যাড্রেস কিনে নেয় নিজেদের মার্কেটিং করার জন্য। আর আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে এবং আপনি এইভাবে ইমেইল অ্যাড্রেস সংগ্রহ করতে পারেন, তাহলে আপনিও এই ইমেইল অ্যাড্রেস গুলো বিক্রি করে আয় করতে পারেন। অথবা নিজেই ইমেইল মার্কেটিং করতে পারবেন।
৮। সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম
বর্তমানে অফলাইন থেকে অনলাইনে কাজকর্মের মাত্রা অনেক পরিমানে বেড়ে গেছে। সম্প্রতি কিছু বছর ধরে সাবস্ক্রিপশন ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে বেশ অনেকটাই। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে অনলাইন ক্রেতাদের প্রায় ১৫% সাইন-আপ করেছে এক বা একাধিক সাবস্ক্রিপশন সার্ভিসে।
আপনার সাইটের কিছু অংশে প্রিমিয়াম কনটেন্ট বা ভিডিও টিউটোরিয়াল রাখতে পারেন যা আপনার অডিয়েন্স মাসিক সাবস্ক্রিপশন এর মাদ্ধমে আপনার সাইটের কন্টেন্টগুলি কিনে নিবে। এভাবে আপনি আপনার সাইট থেকে আয় বাড়াতে পারেন।
সব থেকে বড় কথা কি জানেন?
ওয়েবসাইটে যদি ট্রাফিক বা ভিজিটর না থাকে তাহলে কোন লাভ নেই। কারন, যে সাইটে ভিজিটর নেই সেই ওয়েবসাইটে কেউই টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দিবে না। অথবা বিজ্ঞাপন সেট করলেও সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক পড়বে না বা ইম্প্রেশন আসবে না। আর তাই যে কোন ওয়েবসাইট আপনার আয়ের উৎস তখনই হবে যখন আপনার সাইটটি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ লোক আপনার সাইট ভিজিট করবে। কিন্তু এই পর্যায়ে একটি ওয়েবসাইটকে নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিশ্রম আর ধৈর্য্য।
তবে অসম্ভব কিছুই না, শুধু সঠিক উপায়ে চেষ্টা করতে হবে। ওয়েবসাইটে ভিজিটর বানানোর অনেক উপায় রয়েছে এই বিষয় নিয়ে আরেকটি পোস্টে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। আমাদের ওয়েবসাইটের সকল পোষ্টের আপডেট পেতে টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হয়ে থাকুন এই লিংকে ক্লিক করেঃ https://t.me/banglarblog
ওয়েবসাইট তৈরির আগে কয়েকটি প্রশ্ন জেনে নিন
১। আপনার ওয়েবসাইটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি?
যেকোন সাইট তৈরি করার আগে আপনাকে যে প্রশ্নটি করতে হবে তা হচ্ছে ওয়েব সাইটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি? লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ছাড়া যেকোন কাজ কোনভাবেই সফলতা পাওয়া যায়না। আর সেই কারণেই আপনাকে ওয়েব সাইট তৈরি করার আগেই তা নির্ধারণ করতেই হবে, যা না করলেই নয়। কারন একটাই আপনি যদি কোন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছাড়া একটা ওয়েব সাইট তৈরি করেন এবং সেটার পিছনে আপনি সময় ব্যয় করলেন এবং একিই সাথে টাকাও খরচ করলেন। ওয়েব সাইট এর ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট করালেন, এবং একটা পর্যায়ে এসে আপনি চিন্তা করছেন, এই সাইট দিয়ে আপনি কি করবেন? তাই কিছু করার আগে আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে কাজ করুণ এতে করে আপনি সফলতা পাবেন খুব সহজেই।
২। নিশ্চিত করুন আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন কাকে দিয়ে করাবেন?
এমন কাউকে দিয়ে আপনার ওয়েবসাইট ডিজাইন করবেন না, সাইটটি ভিজিটররা দেখা মাত্রই দৌড়ে পালিয়ে যায়। এমন কাউকে দিয়ে ডিজাইন করাবেন, যে আপনার কাজ বুঝবে এবং আপনি কিভাবে চাচ্ছেন জানবে, তারপরে সেই ভাবে কাজ করবে। এমন কাউকে সিলেকশন করবেন না, যে কোনভাবেই ওয়েব ডিজাইনে অভিজ্ঞ নয়। একটা ভালো বাড়ির ডিজাইন করতে গেলে যেমন একজন ভালো আর্কিটেক্ট দরকার ঠিক তেমনি একটা ভালো মানে ওয়েব সাইট ডিজাইন করতে গেলে দরকার একজন ভালো মানের ওয়েব ডিজাইনার। আমরা নিজেররাই ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস দেই আপনি চাইলে খুব কম খরচে আমাদের কাছ থেকে আপনার ওয়েবসাইট ডিজাইন করিয়ে নিতে পারেন। বিস্তারিত জানুন
৩। ওয়েবসাইট নিয়ে মার্কেটে আপনার টার্গেট কি?
আপনি যেকোন কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই এর মার্কেট নির্ধারণ করে আপনার কাজ শুরু করবেন আর সেই জন্য আপনার এর মার্কেটিং গোল এবং টার্গেট কি সেটা আপনাকে বুঝতে এবং জানতে হবে। আর মার্কেটে আমাদের টার্গেট বুঝে আমাদেরকে কাজে মনোযোগ দিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে হবে। চাহিদা অনুযায়ী ওয়েব সাইটটিও হতে হবে সুন্দর এবং গর্জেউস একটা লুক যা দেখলেই যাহাতে সবার নজরে আসে এবং সেই সাথে রেডি করতে হবে ভালো কনটেন্ট।
৪। ওয়েবসাইটটি তৈরি করার জন্য আপনার সময় হবে কিনা?
একটি ওয়েব সাইট তৈরি করার জন্য আপনার সেই সময় আছে কিনা নেই তা নিজেকেই প্রশ্ন করুণ? কারণ তা না হলে আপনি ডিজাইনারের জন্য সময় দিবেন কিভাবে। আপনার পরিষ্কার ধারনা এবং স্বচ্ছ জ্ঞান থাকতে হবে একটা ওয়েব ডিজাইন করতে কত সময় লাগতে পারে? এবং সেই অনুযায়ী আপনি আপনার ডিজাইনারকে চিন্তা করে সময় দিয়ে ওয়েব সাইটটি ডিজাইন করাবেন।
৫। পরিচালনা করার জন্য যে খরচ দরকার তা বহন করতে পারবেন কি না?
একটা ওয়েব সাইট তৈরি করার পর এর আনুসাঙ্গিক অনেক ধরণের খরচ থাকবে। যেমনঃ পরবর্তী বছরের জন্য ডোমেইন হোস্টিং রিনিউ, এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি। যার জন্য একটা পরিমাণ টাকা দরকার, তা আপনি আসলেই বহন করতে পারবেন কিনা? একটা ওয়েব সাইট তৈরি করার পর যদি বন্ধ করে দিতে হয় তাহলে তৈরি করবেনই বা কেন? এই বিষয়ে আমার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। ফেসবুকে আমি
৬। একটি সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা আছে কিনা?
মনে রাখবেন আপনি যদি প্ল্যান ছাড়া কোন কিছু করেন তাহলে আমি নিশ্চিত আপনি নিচের প্রশ্ন গুলোর সম্মুখিন হবেন এবং তখন কোন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন না। তাই আগে থেকে সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করুণ। যাতে কাজের অর্ধেক অবস্থায় গিয়ে নিচের প্রশ্নগুলো নিয়ে আপনাকে ঝামেলায় পড়তে না হয়।
- কিভাবে কি করবেন?
- কোথা থেকে শুরু করবেন?
- কিভাবে সফল হবেন?
আপনাকে আগেই কর্ম পরিকল্পনা করে কাজ আরাম্ভ করতে হবে।
৭। রেস্পন্সিভ ডিজাইনের কথা ভাবছেন কিনা?
বর্তমান মার্কেটে রেস্পন্সিভ ওয়েব সাইট ডিজাইন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রেস্পন্সিভ ডিজাইন উপকারিতা হচ্ছে। যেকোন ডিভাইসে যেমনঃ মোবাইল, ডেসকটপ, ল্যাপটপ, ট্যাব ইত্যাদির মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েব সাইটটি সুন্দর একটা ভিউ দেখতে পাবেন যা নন রেস্পন্সিভ ডিজাইনে দেখা সম্ভব নয়।
কোনটা করবেন? ওয়েবসাইট নাকি ব্লগ?
অনেকেই কনফিউশনে থাকেন যে ওয়েবসাইট করবেন নাকি ব্লগ করবেন? কিন্তু এমনটার কারন হচ্ছে এই দুইটার মধ্যে পার্থক্য না বোঝা। আসলে ব্লগ আর ওয়েবসাইটের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। ব্লগ হচ্ছে এক ধরনের ওয়েবসাইট যেখানে বিভিন্ন লেখক তার লেখা পাবলিশ করতে পারে। আর সকল ব্লগকেই এক একটি ওয়েবসাইট বলা চলে। আপনার লক্ষ্য যদি হয় বিজ্ঞাপন থেকে আয় করা তাহলে ব্লগ সাইট বানানোই উত্তম।
কারন এখানে আপনি নিয়মিত লিখতে পারবেন, বা যে কেউ আপনার ব্লগে লেখালেখি করতে পারবে। শুধু তাই নয় নতুন নতুন লেখা পড়ার জন্য নিয়মিত ভিজিটর পাবেন। আর তাছাড়া, ব্লগিং হচ্ছে বর্তমান সময়ে প্রচুর জনপ্রিয় প্রেক্ষাপট। এর মাধ্যমে বিভিন্ন লেখক তার লেখা গোটা বিশ্বের কাছে ছড়িয়ে দিতে পারে।
যদি ব্লগ ওয়েবসাইট করেন তাহলে নিচের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিনঃ
অনেকে আছে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট করেই বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে পাইকারি হারে কপি পেস্ট করে শত শত পোষ্ট করে ফেলে বিজ্ঞাপন দিবে বলে, ইনকাম হবে সেই ভেবে। কিন্তু না কখনই এটি করবেন না এতে করে নিজের ক্ষতি নিজেই করবেন। মনে রাখবেন মাত্র একটি ইউনিক পোষ্ট সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করলে অল্প সময়ে লক্ষ ভিউ হতে পারে কিন্তু শত শত কপিরাইট পোষ্ট মাসের পর মাস গেলেও কয়েক হাজার ভিউ হবে না।
তাই কখনই অন্যের লেখা কপি করে আপনার ওয়েবসাইটে শেয়ার করবেন না এতে করে আর ঝামেলায় পরবেন। যেমনঃ Google বা যে কোন সার্চ ইঞ্জিন কপিরাইট ধরবে, এতে করে আপনার ওয়েবসাইট বা পোস্ট সার্চ রেজাল্টে আসবে না অথবা সার্চ রেজাল্টে র্যাঙ্ক করবে না। এছাড়াও কপিরাইট কন্টেন্ট থাকলে ভালো কোন বিজ্ঞাপন কোম্পানি আপনার ওয়েবসাইট আপ্প্রভ করবে না যেমন গুগল এডসেন্স। আর যদি সার্চ রেজাল্ট থেকে ভিজিটর না আসে বা বিজ্ঞাপন না পান তাহলে ইনকাম তো দূরের কথা বাধ্য হয়ে ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিতে হবে।
কি বিষয়ে নিয়ে ব্লগ সাইট তৈরি করবেন?
আসলে প্রথম অবস্থায় সবচাইতে বড় যে সমস্যাটি হয় সেটি হচ্ছে, কোন বিষয়ে ব্লগ করবেন সেটা খুঁজে না পাওয়া? এটার মূল কারণ হচ্ছে তাড়াহুড়ো করা। আমরা যখন কোন উৎসাহমূলক লেখা পড়ি বা কারো সফলতার গল্প শুনি তখনই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি আমিও তেমন হব। এর জন্য যত পরিশ্রম করতে হয় করব। হ্যা, এমন ভাবাই শ্রেয়। কিন্তু আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে আমরা ধৈর্য্য ধরার চেষ্টা করতে পারি না। আমাদের সব কিছু ইন্সট্যান্ট বা তৎক্ষণাৎ দরকার। আর এই জন্য শেষ পর্যন্ত আমাদের তেমন কিছুই হয় না।
আর তাই যেহেতু আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট একদিন বা দুইদিনের জন্য নয়। যেহেতু এটা সারা জীবনের জন্য তাই হুট করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন না যে আপনি কোন বিষয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। ভাবুন, দেখুন, শুনুন, বুঝুন তারপর নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন আপনি কি করবেন? কেন করবেন এবং কিভাবে করবেন?।
ব্লগ সাইটের বিষয় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কিছু টিপস
১. আপনি ভাল জানেন এবং আপনার ইন্টারেস্ট আছে এমন যে কোন বিষয়েই আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। আপনি যেটাই জানুন না কেন সেটা নিয়েই শুরু করে দিতে পারেন লেখালেখি। শেয়ার করুন আপনার নিজের জ্ঞান। কোয়ালিটি থাকলে সব বিষয়েই সাইট করা যায়। এমন অনেকেই আছেন যারা তাদের সখের অনেক কিছু নিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করেও সেখান থেকে প্রতি মাসে কয়েক হাজার ডলার ইনকাম করছেন।
২. আপনি আপনার পড়াশোনার বিষয়টিকে ওয়েবসাইট বানানোর কাজে লাগাতে পারেন। যেমন ধরুন, আপনি একজন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এর ছাত্র। তাহলে আপনি চাইলে বিজনেস সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখালেখির অভ্যাস করতে পারেন। আপনার সাইটে প্রতিদিন, সম্ভব না হলে প্রতি সপ্তাহে অথবা মাসে অন্তত একটি করে পোস্ট লিখুন। চেষ্টা করুন পোস্ট যেন ইন্টারেস্টিং হয়, ইউনিক হয় এবং মানুষ বা ভিজিটর যাতে সেটা পড়ে নতুন কিছু জানতে পারে। এই ভাবে লিখতে থাকলে দেখবেন একসময় আপনি পার্মানেন্ট ভিজিটর পেয়ে যাবেন যারা আপনার সাইটে নিয়মিত ভিজিট করবে।
৩. কখনো হেজিটেশনে ভুগবেন না যে কি লিখব? কেমন হবে? কেউ পছন্দ করবে কিনা? আপনি সেটাই লিখবেন যেটা আপনি জানেন। লিখতে লিখতেই এক সময় আপনি আপনার ব্লগকে জনপ্রিয় করে তুলতে পারবেন। আপনি যত লিখবেন আপনার লিখা তত আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে থাকবে। একবার ব্লগ জনপ্রিয় হয়ে উঠলে সেখানে আপনি অন্যান্য লেখকদের ও আমন্ত্রণ করতে পারেন আপনার ব্লগ লিখার জন্য। এবং অন্যান্য ব্লগাররাও যদি আপনার ব্লগে লিখা শুরু করে দেয় তাহলেই তো আপনি সফল। এরপর আপানাকে আর পেছনে ফিরতে হবে না।
এই ভাবে যদি একটি সাইট কে দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে উপরোল্লেখিত উপায় সমূহ অবলম্বন করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে পার্মানেন্ট আয়ের উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।
কতদিন লাগতে পারে সম্পূর্ণরূপে সফল হতে?
আসলে এর কোন সঠিক উত্তর নেই। তবে এটা বলা যায় আপনি যদি বেশ কঠিন পরিশ্রম করতে পারেন তাহলে ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে আপনার সাইটটিকে একটি অবস্থানে নিয়ে আসা সম্ভব। তবে এর থেকে কম সময়েও অনেকে নিজের সাইটকে ভালো পর্যায়ে নিয়ে আসতে পেরেছে। আবার অনেকে আছে ২/৩ বছরের মধ্যেও সাইটের কোনো উন্নয়ন করতে পারে না। তাই সম্পূর্ণ ব্যাপারটা আপনার উপর নির্ভরশীল। যদি সঠিক উপায় পরিশ্রম করতে পারেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইটই হতে পারে আপনার সোনার ডিম পাড়া হাঁস।
আশা করি একটি সাইট থাকার গুরুত্ব কতটা তা বুঝতে পেরেছেন। যাই হোক এবার সিদ্ধান্ত আপনার হাতে। আজ এই পর্যন্তই। ইনশাআল্লাহ আগামী পর্বে একটি ওয়েবসাইট করতে কি কি লাগবে, ভিজিটর বানানোর উপায় এবং কিভাবে দ্রুত সফল হবেন সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলচনা করব।
লেখাটি ভালো লেগে থাকলে ফেসবুকে আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না এবং আমাদের পেজে লাইক দিবেন এবং সকল পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হয়ে থাকুন। আপনাদের উৎসাহ-ই আমাদের অনুপ্রেরনা।
আমাদের সার্ভিস সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।